টেকনাফে তরুণীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় সংঘর্ষ: ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা!

গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল •

টেকনাফের হোয়াইক্যং পাহাড়ী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর (চাকমা) পল্লীর এক তরুণীকে বিরক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাকমা তরুণদের সঙ্গে বাঙ্গালী যুবকদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এতে নৃগোষ্ঠী (চাকমা),বেশ কয়েকজন বাঙ্গালী যুবকসহ কমপক্ষে ১০/১৫ জন আহত হয়েছে।

গত রবিবার রাতে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং কাটাখালী এলাকায় এ ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

স্থানীয় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল সম্রাটসহ ২০ জন যুবক উক্ত ঘটনায় জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। আহতরা সবাই কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয়রা আরো জানান, হোয়াইক্যং ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড কাটাখালী চাকমা পল্লীতে এক তরুণীকে ইভটিজিং করা নিয়ে বিচারে বসে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল সম্রাট ও তার ভাই কায়সার। বৈঠকের এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে চাকমা তরুনদের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়।

এদিকে সংঘটিত ঘটনার সাথে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৩ জনকে আসামী করে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন যতীন চাকমা নামে এক যুবক।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে যতিন চাকমা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন আসামিরা। পুলিশ তাদেরকে আইনের আওয়তাই নিয়ে আসার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এলাকাটি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

হোয়াইক্যং পাহাড়ী অরণ্য বৌদ্ধ বিহারের দায়িত্বে থাকা অন্তর চাকমা বলেন, ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল ও তার ভাই কায়সার বিচারে এসেছিল। সেখানে কথা কাটাকাটি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে হামলায় আমাদের ১০ নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন।

এদিকে ঘটনার পর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উখিয়া টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি। এসময় তিনি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী (চাকমা) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেন এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও আহতদের চিকিৎসার্থে প্রধান মন্ত্রীর শেখ হাসিনার পক্ষ হয়ে নগদ তিন লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষনা দেন।

এছাড়া ঘটনার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. পারভেজ চৌধুরী ও উখিয়া সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার শাকিল আহমদ। সোমবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হয়ে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া চাকমা পল্লীর বেশ কয়েকজনকে নগদ টাকা অনুদান প্রদান করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী বলেন, চাকমা তরুণীকে উত্তক্তের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় তোফায়েলের সঙ্গে কয়েকজন চাকমা ছেলে-মেয়ের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে মারধরের ঘটনা ঘটে। এছাড়া কাটাখালীর ব্রিজ সংলগ্ন মূল সড়কেও ১০/১২ জন ছেলের সঙ্গে চাকমা তরুণদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ৫/৬ জন চাকমা ও ৩/৪ জন স্থানীয় যুবক আহত হন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।